রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের জন্মবার্ষিকী আজ বুধবার। ১৮৯৯ সালের আজকের দিনে বরিশালে জন্ম নেন বাংলা ভাষার শুদ্ধতম কবি। তার পূর্বপুরুষ বিক্রমপুরে বসবাস করতেন। তার বাবা সত্যানন্দ দাশ ছিলেন একজন শিক্ষক এবং মা ছিলেন কবি কুসুম কুমারী দাশ।
বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রধান আধুনিকতম বাঙালি কবি হিসেবে পরিচিত জীবনানন্দ ব্রজমোহন স্কুল থেকে এসএসসি, ব্রজমোহন কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেন। পরে প্রেসিডেন্সি কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ও ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
১৯২২ সালে কলকাতা সিটি কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে শুরু করেন পেশাগত জীবন। এরপর পর্যায়ক্রমে দিল্লির রামযশ কলেজ, ব্রজমোহন কলেজ, বাগেরহাট কলেজ, হাওড়া গার্লস কলেজ, খড়গপুর কলেজে অধ্যাপনা করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কবি কলকাতার হাওড়া কলেজে অধ্যাপনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
কবি ছোট বয়স থেকেই কবিতা লিখতেন। তার মায়ের কাছ থেকেই সাহিত্যচর্চা ও কবিতা লেখার প্রেরণা পান জীবনানন্দ দাশ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে জীবনানন্দের কবিতার ভূমিকা ঐতিহাসিক। ষাটের দশকে বাঙালির জাতিসত্তা বিকাশের আন্দোলনে এবং ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে সংগ্রামী বাঙালি জনতাকে তার রূপসী বাংলা তীব্রভাবে অনুপ্রাণিত করে।
মূলত কবি হলেও তিনি অসংখ্য ছোট গল্প, কয়েকটি উপন্যাস ও প্রবন্ধগ্রন্থ রচনা করেন। তার প্রথম কবিতা ‘বর্ষা আবাহন’ প্রকাশিত হয় ব্রহ্মবাদী পত্রিকায়। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ঝরাপালক’ প্রকাশিত হয় ১৯২৭ সালে।
জীবনানন্দের কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে ধূসর পাণ্ডুলিপি, বনলতা সেন, মহাপৃথিবী, সাতটি তারার তিমির, রূপসী বাংলা, বেলা অবেলা কালবেলা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
জীবনানন্দ দাশের ‘বনলতা সেন’ কাব্যগ্রন্থ নিখিলবঙ্গ রবীন্দ্রসাহিত্য সম্মেলনে পুরস্কৃত হয়। জীবনানন্দের শ্রেষ্ঠ কবিতা গ্রন্থটিও ভারত সরকারের সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার লাভ করে।
১৯৫৪ সালের ২২ অক্টোবর কলকাতায় ট্রাম দুর্ঘটনায় মারা যান এই কবি। তার স্ত্রীর নাম লাবণ্যপ্রভাভাই দাশ। তার দুটি সন্তান মানষী দাশ ও সমরানন্দ দাশ।
ব্রেকিংনিউজ/নিহে