কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে আবারো ফিরেছে ইয়াবা ব্যবসার প্রতিযোগিতা। অতীতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়াকড়িতে ইয়াবা ব্যবস্যা হ্রাস পেলেও ইদানীং বিকোচ্ছে পুরোদমে। হাত বাড়ালে পাওয়া যাচ্ছে ইয়াবার বড় বড় চালান।
গেল নভেম্বর মাসে টেকনাফ ২ বিজিবি'র ২৪ কোটি টাকার ইয়াবা আটক করেছে। টেকনাফ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর প্রায় ৩ কোটি টাকা মূল্যের ১লাখ ইয়াবা আটক করেছে। এর পাশাপাশি র্যাব ও কোষ্টগার্ড গত এক মাসে ১৫ থেকে বিশ কোটি টাকার ইয়াবা আটকের সংবাদ রয়েছে। আটকের পাশাপাশি হাজার কোটি টাকা মূল্যের ইয়াবা বিভিন্ন কলাকৌশলের মাধ্যমে মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে দেশের অভ্যন্তরে চলে যাচ্ছে।
সুত্র জানায়, টেকনাফ উপজেলার সাবরাং, সদর, হ্নীলা, হোয়াইক্যং, বাহারছড়া ও সেন্টমার্টিনের নতুন ও পুরাতন গডফাদারগণ পুরোদমে ইয়াবা কারবারে জড়িয়ে পড়েছে। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এই ব্যবসা চলছে। কে কার চেয়ে বেশি বড় চালান নিতে পারে সেই ভাবে মিয়ানমারের ইয়াবা ডিলারদের কাছে আগে থেকে সরবরাহ দেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছে। যেহেতু মায়ানমারে বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেষে ৩৭টি ইয়াবা তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে। তারাও বাংলাদেশী ডিলারদেরকে ইয়াবা সরবরাহ দেওয়ার জন্য প্রতিযোগিতায় মত্ত হয়ে উঠেছে।
জানা যায়, বাংলাদেশের করোনাকালীন লকডাউনের সময়ে সকল যানবাহন বন্ধ থাকায় মায়ানমার থেকে ইয়াবা সরবরাহ প্রায় বন্ধ হয়ে পড়েছিল। ফলে এই সময়কালে উৎপাদিত ইয়াবার জমাকৃত চালান কম দামে বাংলাদেশে সরবরাহ করা হচ্ছে। এমনকি বাকি টাকাতে বড় বড় চালান বাংলাদেশী ডিলারদের নিকট তুলে দিচ্ছে। ফলে টেকনাফে উপজেলায় ইয়াবা ব্যবসায়ী ও পাচারকারীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মিয়ানমারে উৎপাদিত চার প্রকার ইয়াবা রয়েছে। এর মধ্যে R7, WY ও চম্পাসহ আরো একটি সাদা রঙের ইয়াবা উৎপাদন করা হচ্ছে।
আটককৃত মাদককারবারি সূত্র মতে, আর সেভেনের দাম বাংলা টাকায় প্রতিটি ৫০ টাকা যা ঢাকার মূল্য তিনশো টাকা, "ডব্লিউ ওয়াই" বাংলা টাকায় প্রতিটি ৩০ টাকা, যা ঢাকার মূল্য দুইশো টাকা বিক্রি হচ্ছে। এর কারণে ক্রয়ের চেয়ে লাভের তিন বা চার গুন বেশি হওয়ায় ছোট, বড়, যুবক, বৃদ্ধ সকলেই এই ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে।
পাচারকৃত ইয়াবা দেশের অভ্যন্তরে পাচারের মূল বাহন হচ্ছে টেকনাফ থেকে ছেড়ে যাওয়া বিভিন্ন যানবাহন ও ফিশিং বোট।
সচেতন মহলের অভিমত, মাদক ব্যবসা যদি এভাবে চলতে থাকে আর তা যদি প্রতিরোধ করা না যায়, তাহলে টেকনাফসহ দেশের যুব-সমাজ ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে চলে যাবে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নাজুক হয়ে পড়বে।
এ বিষয়ে টেকনাফ বিসিজি স্টেশন কমান্ডার লেঃ আমিনুল হক জানান, মাদকের সাথে কোন আপোষ নেই। বর্তমান পর্যটক মৌসুমকে সামনে রেখে সীমান্তে টহল জোরদার রয়েছে। মাদকের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করলে আমরা বিন্দু মাত্র কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
ব্রেকিংনিউজ/নিহে