বিনা অপরাধে ৫ বছর কারাগারে বন্দী থেকে ঢাকার পল্লবীর বেনারসী কারিগর মো. আরমান কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন। হাইকোর্টের নির্দেশে বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে মুক্তি পেয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বাড়ি ফিরেছেন আরমান।
২০১৬ সালে পল্লবী থানার এক মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি শাহাবুদ্দিনের বাবার নামের সঙ্গে মিল থাকায় আরমানকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর থেকে তিনি কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন।
আইনজীবী হুমায়ূন কবির পল্লবের এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ৩১ ডিসেম্বর বিচারপতি মো.মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ আরমানকে মুক্তি দেন। এ সময় আদালত তাকে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে পুলিশ মহাপরিদর্শকের প্রতি নির্দেশ দেন।
কাশিমপুর কারাগারের জেল সুপার আব্দুল জলিল জানান, ২০০৫ সালে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা হয়। ওই মামলায় ককটেল ও দেশীয় অস্ত্রসহ সাতজনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। আসামিদের দেয়া তথ্যে তাদের সহযোগীদের ধরতে ডিবির উপ-পরিদর্শক (এসআই) নূরে আলম সিদ্দিকী পল্লবীর বিহারী ক্যাম্পে অভিযান চালিয়ে ৪০ বোতল ফেনসিডিলসহ শাহাবুদ্দিন বিহারি ও তার দুই সহযোগীকে আটক করেন।
এ ঘটনায় পল্লবী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়। পরে ২০০৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর শাহাবুদ্দিনসহ গ্রেফতার তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। ২০০৭ সালের ৫ মার্চ জামিনে মুক্ত হয়ে ২০১১ সালের ১৭ জানুয়ারি আদালতে আত্মসমর্পণ করে পুনরায় জামিন নেয় শাহাবুদ্দিন।
এরপরই ফেরারী হয়ে যায় শাহাবুদ্দিন কিন্তু তার দুই সহযোগী থেকে যান কারাগারে। ২০১২ সালের ১ অক্টোবর ওই মামলায় শাহাবুদ্দিন ও তার দুই সহযোগীর ১০ বছরের জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন ঢাকার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফারুক আহম্মদ। এরপর পলাতক শাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
এ ঘটনার দীর্ঘদিন পর ২০১৬ সালের ২৭ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পল্লবীর ১৩ হাউস, ব্লক-এ, সেকশন ১০ নম্বর এলাকায় অভিযান চালায় পল্লবী থানা পুলিশ। এ অভিযানে একটি চায়ের দোকান থেকে মূল আসামি শাহাবুদ্দিনের বাবার নামের সঙ্গে মিল থাকায় আরমানকে গ্রেফতার করেন তৎকালীন ওই থানার এসআই রাসেল। এর পর থেকে আরমানকে কাশিমপুর কারাগার-২ এ রাখা হয়।
এদিকে, বিনা অপরাধে জেলা খাটার বিষয়ে দোষী পুলিশ সদস্যের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন আরমানের বৃদ্ধা মা বানু।
ব্রেকিংনিউজ/এসআই