রান্নাকে সুস্বাদু করতে মসলার বিকল্প নেই। সঠিক মসলা সঠিকভাবে ব্যবহার করলে খাবারের স্বাদই বাড়ায় না অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতাও পাওয়া যায়। আর মসলা যদি খারাপ হয়, তাহলে পুরো খাবারটি বিষাক্ত হয়ে যেতে পারে। অধিক মুনাফার আশায় বাজারে ভেজাল মসলায় সয়লাব। ফলে অনেকে না চিনেই ভেজাল মসলা কিনে আনেন। আর এ মসলার ফলে ক্যান্সার, কিডনি ও লিভারের রোগ সৃষ্টি হতে পারে।
বাজার থেকে কেনা মসলাটি খাটি নাকি ভেজাল এটি চেনার কিছু উপায় রয়েছে। আসুন এ পর্বে জেনে নেই ভেজাল মসলা চেনার উপায়গুলো।
গোলমরিচ
বাজারে অনেক সময় গোলমরিচের সঙ্গে পেঁপের বীজ মিশিয়ে দেয়া হয়। ভেজাল গোল মরিচ চেনার পদ্ধতি-
এক গ্লাস পানিতে সামান্য গোলমরিচ ঢালুন। খাটি গোলমরিচ হলে তা পানির নিচে নেমে যাবে। অন্যথায় পানির উপর ভেসে থাকবে।
মরিচের গুঁড়া
একটি কাঁচের গ্লাসের পানিতে সামান্য পরিমাণ মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে নিন। কৃত্রিম রং তাৎক্ষনিকভাবে গলে পানির নিচে দিকে নামতে থাকবে।
সরিষার বীজ
বাজারে অনেক সময় সরিষার সঙ্গে আরগেমেন বীজ মিশিয়ে দেয়া হয়।
কাঁচের প্লেটে অল্প পরিমাণে সরিষা বীজ নিন। এরপর হাত দিয়ে নাড়াচাড়া করে আরগেমেন বীজ মেশানো হয়েছে কিনা ভালোভাবে খেয়াল করুন। সরিষার বীজের পৃষ্ঠ মসৃণ থাকে এবং গুঁড়া করলে এর ভেতরে হলুদ অংশ দেখা যাবে। আরগেমেন বীজ দানাদার, রুক্ষ পৃষ্ঠের হয়ে থাকে এবং কালো রঙের হয়। এটি গুঁড়া করলে ভেতরে সাদা অংশ দেখা যাবে।
হলুদের গুঁড়া
এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ হলুদের গুঁড়া নিন। এরপর দেখবেন খাটি হলুদের গুঁড়া গ্লাসের পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সময় হালকা হলুদ রঙ ছড়াবে। কৃত্রিম রঙ মেশানো হলুদের গুঁড়া গ্লাসে পানিতে তলিয়ে যাওয়ার সময় গাঢ় হলুদ রঙ ছড়াবে।
গুঁড়া মসলা
এক গ্লাস পানিতে এক চা-চামচ গুঁড়া মসলা ঢালুন। খাঁটি মসলার গুঁড়া পানিতে কোনোরকম ধূলিকণা ছড়াবে না। অন্যদিকে মসলা যদি ভেজাল হয় তাহলে পানির ওপরে কাঠ বা তুষের গুঁড়া ভেসে উঠবে।
শুকনো হলুদ
এক গ্লাস পানিতে একটি হলুদের টুকরা রাখুন। খাঁটি হলুদ পানিতে কোনো ধরনের রঙ ছড়াবে না। ভেজাল হলুদের টুকরো অনেক বেশি উজ্জ্বল দেখায় এবং পানিতে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রঙ ছড়ায়।
অনেকেই কাঁচা হলুদ কেনেন। কিন্তু ওই হলুদ খাঁটি কি না, তা যাচাই করতে একটি কাগজের ওপর এক টুকরো হলুদ রেখে তার ওপর ঠান্ডা পানি ঢেলে দেখুন। যদি রং ছড়াতে থাকে, তবে তাতে ভেজাল রয়েছে।
জিরা
জিরার মধ্যে ভেজাল হিসেবে মৌরি মেশানো হয়ে থাকে। তাই এক্ষেত্রে পরখ করতে হবে জিরার স্বাদ ও গন্ধ। দু’একটি জিরা মুখে দিয়ে চিবিয়ে দেখুন। আসল জিরা হলে এর স্বাদ হবে ঝাঁঝালো ও গন্ধ হবে তীব্র। এছাড়াও জিরার মধ্যে মৌরি শনাক্তের পদ্ধতি হলো-
একটি কাঁচের প্লেটে সামান্য পরিমাণ জিরা নিন। জিরাগুলো আঙুল দিয়ে নাড়াচাড়া করুন। মৌরি মেশানো হয়ে থাকলে ভালোভাবে খেয়াল করলে তা দেখা যাবে।
এছাড়াও জিরায় ভেজাল হিসেবে কয়লাসহ ঘাসের বীজ মিশিয়ে দেয়া হয়। এ ধরনের ভেজাল জিরা শনাক্তের জন্য- সামান্য জিরা হাতের তালুতে নিয়ে পিষে দেখুন। যদি হাতে কালি লাগে, তাহলে জিরায় ভেজাল আছে। এতে কয়লা যোগ করা হয়েছে।
দারুচিনি
দারুচিনিতে ভেজাল হিসেবে ক্যাসিয়ার বার্ক ব্যবহার করা হয়।
কাঁচের প্লেটে অল্প পরিমাণে দারুচিনি নিন। ভালোভাবে খেয়াল করলে ভেজাল দারুচিনি শনাক্ত করতে পারবেন। কেননা ক্যাসিয়ার বার্ক অনেক শক্ত ও পুরু এবং বিরল ক্ষেত্রে সুগন্ধ ছড়ায়। এছাড়া দারুচিনির ছাল অনেক পাতলা এবং সহজেই পেনসিল না পেনের চারপাশে মোড়ানো যায় এবং এর বিশেষ গন্ধ থাকে।
ব্রেকিংনিউজ/এসআই