দীর্ঘ ৩১ বছর আগে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলায় ভাশুরসহ ৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আংশিক শুনানি শেষে পরবর্তী শুনানির জন্য ২ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে এ দিন ধার্য করেন।
গত ৯ নভেম্বর অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য থাকলেও আসামিপক্ষের আইনজীবী অসুস্থ হওয়ায় সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত ২৬ নভেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করেন। কিন্তু আজ শুনানি শেষ না হওয়ায় নতুন দিন ধার্য করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করে ৪ জনের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি ঢাকার নিম্ন আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এক হাজার ৩০৯ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র গত ৯ মার্চ আমলে নেন আদালত।
মামলার আসামিরা হলেন- সগিরা মোর্শেদের ভাশুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী, তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন, হাসান আলীর শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান ও ভাড়াটে খুনি মারুফ রেজা।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সগিরা মোর্শেদ ১৯৮৯ সালে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে মেয়েকে আনতে যান। বিকেল ৫টার দিকে সিদ্ধেশ্বরী রোডে মোটরসাইকেলে করে আসলে তার হাতে থাকা সোনার চুড়ি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। নিজেকে বাঁচাতে দৌড় দিলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পথেই সগিরার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় ওইদিনই নিহতের স্বামী আবদুস সালাম চৌধুরী বাদী হয়ে রমনা থানায় মামলা করেন। পরে মিন্টু ওরফে মন্টু ওরফে মরণের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ।
১৯৯১ সালের ১৭ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত। এ মামলায় ৭ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। সাক্ষ্য নেয়ার সময় ঘটনার সঙ্গে মারুফ রেজার সম্পৃক্ততার তথ্য উঠে আসায় অধিকতর তদন্তের আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। আদালত ওই বচরের ২৩ মে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।
ওই আদেশের বিরুদ্ধে মারুফ রেজা হাইকোর্টে আবেদন করলে ১৯৯১ সালের ২ জুলাই হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিতের আদেশ দেন। একইসঙ্গে মামলা বাতিল প্রশ্নে রুল জারি করা হয়। পরে ১৯৯২ সালের ২৭ আগস্ট হাইকোর্ট আরেক আদেশে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন।
দীর্ঘ ২৮ বছর পর ২০১৯ সালের ২৬ জুন ওই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে আদেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙেগ্ ৬০ দিনের মধ্যে অধিকতর তদন্ত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। এ অবস্থায় পিবিআই তদন্তে নামে। এতে হত্যার সঙ্গে নিহত সগিরার স্বামীর ভাই ডা. হাসান আলী চৌধুরী, তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন, হাসান আলীর শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান ও ভাড়াটে খুনি মারুফ রেজার নাম বেরিয়ে আসে।
এরপর গেল বছরের ১০ নভেম্বর রেজওয়ান, ১৩ নভেম্বর হাসান আলী ও তার স্ত্রী এবং মারুফ রেজাকে গ্রেফতার করে। চার আসামিই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এরপর পিবিআই চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি ৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
ব্রেকিংনিউজ/এমআর