শ্রুতিমধুর নয় এমন স্কুলের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। আবার ‘গোবরগাড়ি’ নামের গ্রামটি এখন হয়েছে ইসলামপুর। এটাও অবাক করার বিষয় নয়। কিন্তু তাই বলে গ্রামের নাম ফাকিং? এই নিয়ে ইন্টারনেটে বহু হাসি ঠাট্টা হয়েছে। অগত্যা গ্রামের নাম বদলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
জানা গেছে, হাজারো বছরের পুরনো নাম বদলে ফেলেছে অস্ট্রিয়ার গ্রাম ফাকিং। জার্মানির সীমান্তে অবস্থিত ছোট্ট এই গ্রামে লোক সংখ্যা ১০০ জন। দীর্ঘদিন ধরেই এই গ্রামের নাম ফাকিং। ইন্টারনেট আসার আগে পর্যন্ত গ্রামের নাম নিয়ে কোনো সমস্যাও ছিল না। কিন্তু ইন্টারনেট আসতেই শুরু হলো সমস্যা। বাড়লো পর্যটকদের উৎপাত। অন্য কোনো কারণে নয়, সকলেই গ্রামের নাম লেখা সাইনবোর্ডের সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন। কেউ কেউ খুলে নিয়ে যান গ্রামের নাম। ফলে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে গ্রামের মানুষ নাম বদলানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন। প্রশাসনকে জানানো হয়। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে গ্রামের নাম বদলে হচ্ছে ফাগিং।
উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে, জার্মান ভাষায় ফাকিং শব্দের কোনো অর্থ নেই। উচ্চারণ হবে ফাগিং। এতদিন এই নাম সিয়ে যে বিপত্তি হতে পারে, তা বুঝতে পারেননি গ্রামের সাধারণ মানুষ। তবে ফাকিং শব্দের ইংরেজি অর্থ জানার পর গ্রামের মানুষের বিপত্তি বেড়েছে। কোনা কোনা ব্যক্তি ফাকিং সাইনবোর্ডের গায়ে লিখে দিয়েছেন ‘ আমাদের আবহাওয়া ফাকিং গুরুত্বপূর্ণ।’ গ্রামের মানুষ চাইছিলেন না এই বিপত্তি চলুক। সে কারণে তারা নাম বদলের সিদ্ধান্ত নেন।
বিশ্ব মানচিত্র থেকে পাল্টে যাওয়া দেশগুলোর নাম-
১. মিয়ানমার- সামরিক জান্তা ১৯৮৯ সালে বার্মার নাম পাল্টে মিয়ানমার রাখে। রাজধানী রেঙ্গুনের নাম পাল্টে রাখা হয় ইয়াঙ্গুন। অনেকেই হয়তো সামরিক জান্তার প্রস্তাব মেনে নিতে চায়নি। অং সান সুচি গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলনরত সকলেই মিয়ানমারে বদলে বার্মা বলতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতেন। তবে শেষ পর্যন্ত গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার পর আনুষ্ঠানিকভাবে মিয়ানমার ব্যবহার ব্যবহার হচ্ছে।
২. এসোয়াতিনি- ব্রিটেনের কাছে থেকে স্বাধীনতা লাভের ৫০ বঝর পর ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আফ্রিকার সোয়াজিল্যান্ড। দেশটির রাজা তৃতীয় এমসোয়াতি সিদ্ধান্ত নেন। ঔপনিবেশিকদের দেয়া নাম নয়, দেশ ফিরবে তার আসল নামে। এসোয়াতিনি অর্থ সোয়াজিদের ভূমি।
৩. বুরকিনা ফাসো-১৯৫৮ সালে ফ্রান্সর কাছ থেকে স্বাধীনতালাভের পরও অনেকদিন পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির নাম আপার ভোল্টাই ছিল। ১৯৮৪ সালে দেশটির প্রধান দুই ভাষা থেকে নেয়া হয় এ নাম। মোসি ভাষা থেকে ‘বুরকিনা’ এবং ডিউলা ভাষা থেকে ‘ফাসো’ শব্দ নেওয়া হয়েছে। বুরকিনাফাসো অর্থ- ন্যায়পরায়ণ মানুষদের দেশ।
৪. কম্বোডিয়া- ১৯৭০ সালে প্রিন্স নরোডোম সিহানাক এক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখলের পর কিংডম অব কম্বোডিয়ার নাম পাল্টে রাখেন খেমার রিপাবলিক। ১৯৭৫ সালে পল পটের খেমার রুজ ক্ষমতার দখলের পর দেশের নাম আবার পাল্টে রাখেন ডেমোক্রাটিক কাম্পুচিয়া। পরে ১৯৭৯ সালে ভিয়েতনামের সমর্থনে খেমার রুজ উৎপাত হলে দেশের নাম হয় পিপলস রিপাবলিক অব কাম্পুচিয়া। ১৯৮৯ সালে আবার রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর কম্বোডিয়া তার পুরনো নাম ফিরে পায়।
৫ বেনিন- ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের ১৫ বছর পর দাহোম নাম পাল্টে পিপলস রিপাবলিক অব বেনিন নাম ধারণ করে। উপনিবেশ-পূর্ব সময়ে আফ্রিকায় একই নামে এক শক্তিশালী রাজত্ব ছিল। দক্ষিণ-পশ্চিম নাইজেরিয়ার একটি প্রদেশের নামও সেই রাজ্যের অংশ ছিল। সে প্রদেশের নামও রাখা হয় বেনিন।
ব্রেকিংনিউজ/এমএইচ