জন্ম-মৃত্যুর মতো বার্ধক্যও জীবনের অনিবার্য পরিণতি। যদিও বিজ্ঞানীরা অনেক বছর ধরেই বার্ধক্য ঠেকাতে কাজ করে যাচ্ছেন। এবার সম্ভবত বিজ্ঞানীরা বার্ধক্য প্রক্রিয়া ধীর করার পথে এক ধাপ এগিয়ে গেছেন। এমনটাই জানাচ্ছেন ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া সান দিয়েগো’র গবেষকরা।
সান দিয়েগো’র গবেষক দল বার্ধক্য প্রক্রিয়া বিভিন্ন কোষে একই সময়ে কি কারণে কতটুকু হারে কাজ করে এই ব্যাপারটি বুঝতে ইস্ট নিয়ে গবেষণা করেন। এই গবেষণার প্রাপ্ত ফলাফলও বেশ কৌতূহলোদ্দীপক।
সাইন্স জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণা অনুযায়ী, ‘একই পরিবেশে একই জিনগত উপাদানে তৈরি কোষের বৃদ্ধিও লক্ষণীয় রকম আলাদা।’
তারা মাইক্রোফ্লুইডিক্স ও কম্পিউটার মডেলিং এর মাধ্যমে বের করেছেন যে ‘প্রায় অর্ধেক কোষের বার্ধক্যের কারণ, কোষের নিউক্লিয়াসের নিউক্লিওলাসের একটি ক্রমহ্রাসমান অবস্থা। বাকি অর্ধেক কোষের বার্ধক্যের কারণ ছিল মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিসফাংশন।’
এই বিজ্ঞানীরা বলেন, ‘এই প্রক্রিয়াটি ২ রকম। নিউক্লিয়ার ও মাইটোকন্ড্রিয়াল। জীবনের প্রাথমিক স্তরেই একটি রুট নির্ধারিত হয়ে যায়, ঐ এজিং রুটেই কোষের বৃদ্ধি ও মৃত্যু হয়।’
এই দলের বিজ্ঞানী নান হাও বলেন, ‘এই ভিন্নতা কেন হয় তা বোঝার জন্য আমরা প্রতিটি এজিং রুটের আণবিক প্রক্রিয়া ও এদের মধ্যকার সম্পর্ক চিহ্নিত করেছি। একটি মলিক্যুলার সার্কিট খুঁজে পেয়েছি, যা কোষের বৃদ্ধি ও বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রন করে।’
মাস্টার সার্কিট নতুনভাবে সাজিয়ে ডিএনএ পরিবর্তন করে এজিং ল্যান্ডস্কেপের মাধ্যমে তারা দেখতে পান, কোষের বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে পরিবর্তন করা যায়।
তারা ভিন্ন একটি ‘নোভেল এজিং রুট’ বের করেন। এতে কোষের জীবনকাল লক্ষণীয় মাত্রায় বৃদ্ধি পায়। এটিই মানুষের বার্ধক্য বিলম্বিত করার সম্ভাব্য পথে নিয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন তারা।
নান হাও মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে বলেন, ‘এই রুটের অস্তিত্ব আমাদের আগে জানা ছিল না। এখন এটি কিভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় বুঝতে পারায় আমরা এই রুটকে নিয়ন্ত্রণ ও পরিবর্তন করতে পারবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গবেষণার মাধ্যমে জিনের নকশা ও কেমিক্যাল ভিত্তিক থেরাপির মাধ্যমে মানবকোষের বার্ধক্য প্রক্রিয়া পরিবর্তনের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে।’
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, তারা আরও বড় পরিসরে তাদের এই মডেলের পরীক্ষা চালাতে চান। ‘বার্ধক্যগ্রস্ত হওয়া একটি মৌলিক জৈবিক প্রক্রিয়া। আমরা এই প্রক্রিয়া সম্পর্কে খুব সামান্যই জানি। এটি করতে পারলে বার্ধক্যজনিত রোগ কমে গিয়ে মানুষ দীর্ঘায়ু হবে’, বলেন বিজ্ঞানী নান হাও। সিএনএন অবলম্বনে।
ব্রেকিংনিউজ/এম